এইচ বি খান : বেকারির ব্যবসা ডুবেছিল। ডুবতে বসেছিল সংসারও। স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে কী ভাবে সংসার চালাবেন তা ভেবে উঠতে পারছিলেন না মোকিম।
মধু বিক্রির জন্য মৌমাছি চাষ করেন অনেকেই। কিন্তু টাকা উপায় করতে কালো মাছি চাষ! এমনই অদ্ভুত কাণ্ড করে সংসার চালাচ্ছেন হুগলির জাঙ্গিপাড়ার রাজবলহাট এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের দফরচক গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ মোকিম।
বেকারির ব্যবসা ছিল মোকিমের। কিন্তু অতিমারির সময় ব্যবসা প্রায় লাটে উঠেছিল। ডুবতে বসেছিল সংসারও। স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে কী ভাবে সংসার চালাবেন তা ভেবে উঠতে পারছিলেন না মোকিম। এর পর ইউটিউব দেখে মাছি চাষের ভাবনা মাথায় আসে মোকিমের। বেঙ্গালুরুতে থাকা এক পরিচিতের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়া থেকে ব্ল্যাক ডায়মন্ড ফ্লাই বা কালো মাছি নিয়ে আসেন মোকিম। শুরু করেন মাছি চাষ। যে বেকারিতে আগে বিস্কুট তৈরি হত সেখানেই এখন প্লাস্টিক গামলায় মাছির ডিম থেকে লার্ভা তৈরি হচ্ছে। সেই লার্ভা অসম, ঝাড়খণ্ড, ত্রিপুরা-সহ বিভিন্ন রাজ্যে বিক্রি করছেন মোকিম।
মোকিমের কথায়, ‘‘এই মাছি চাষে খরচ কম। দু’হাজার টাকা দিয়ে আমি শুরু করেছিলাম। লার্ভার খাবার পচা সব্জি আর মাছ-মাংসের ছাঁট। কালো মাছি থেকে পরিবেশের কোনও ক্ষতির ভয় নেই। জীবিত মাছি পাখির খাবার। আবার মরা মাছি মুরগি খায়।’’
মাছি মানেই ভনভন শব্দ, গা ঘিনঘিনে ব্যাপার। তবে জাঙ্গিপাড়ার মোকিম মুছে দিয়েছেন সেই ধারণাটা। মোকিমের দাবি, ‘‘কালো মাছি চাষের কথা শুনে অনেকেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। জানতে চাইছেন, কী ভাবে মাছি চাষ করা যায়। কখনও ফোনে, কখনও বা ভিডিয়ো কলে মাছি চাষ সম্পর্কে জানতে চাইছেন। আমাকে এই কাজে সাহায্য করে স্ত্রী জাহিরুন্নেসা এবং বড় মেয়ে রাফিজা খাতুন।’’
উঠে আসার কাহিনি শোনাচ্ছেন মোকিম। বলছেন, ‘‘করোনার সময় বেকারির ব্যবসা ডুবে গিয়েছিল। কী করে সংসার চলবে বুঝে উঠতে পারছিলাম না। মাছ চাষ করছিলাম। কিন্তু কিছু হল না। তখনই এই মাছি চাষ করার ভাবনা মাথায় আসে। এখন অনেক অর্ডার আসছে।’’ মোকিমের স্ত্রী জহিরুন্নেসার কথায়, ‘‘এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল একটা সময় যে দুপুরে খাবার জুটত না। এখন সেই দিন বদলেছে।’’
0 মন্তব্যসমূহ
Please Type Your Valuable Feedback.
EmojiKeep Supporting. Flow as on YouTube & Facebook.