বনগাঁ মাদ্রাসায় হামলার অভিযোগে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হুমায়ুন কবির সিদ্দিকি আটক, পরিবারের দুই সদস্যকে খুনেরও অভিযোগ
সেখ জাবিহুল্লাহ, ২৮ মে: এক রোমহর্ষক ঘটনার সাক্ষী থাকল উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ। পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হুমায়ুন কবির সিদ্দিকির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে নিজের বাবা-মাকে খুন করে পালিয়ে এসে বনগাঁর এক মাদ্রাসায় ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একের পর এক ব্যক্তিকে আঘাত করেন। এই হামলায় মাদ্রাসার অন্তত দু'জন শিক্ষক-সহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। অভিযুক্তকে আটক করেছে বনগাঁ থানার পুলিশ। পুরো ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বৃহস্পতিবার সকালে আজানের পর স্বাভাবিকভাবে মাদ্রাসায় পড়াশোনার কাজ চলছিল। সেই সময় আচমকা মাদ্রাসায় ঢুকে পড়ে হুমায়ুন কবির। তাঁর হাতে ছিল ধারালো দা ও কুরুল। প্রবেশ করেই উপস্থিত শিক্ষক ও মাদ্রাসা পরিচালকদের উপর হামলা চালান তিনি। রক্তাক্ত অবস্থায় আহতদের বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। স্থানীয় বাসিন্দারা মাদ্রাসার সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিশবাহিনী। উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করতে গিয়ে আক্রান্ত হন কয়েকজন পুলিশ কর্মীও।
বনগাঁ পুলিশ জেলার এসপি দীনেশ কুমার সাংবাদিকদের জানান, “হুমায়ুন ধারালো ছুরি দিয়ে মাদ্রাসায় হামলা চালায়। ও নিজেই নিজের বাবা-মাকে খুন করে পালিয়ে এসেছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত হুমায়ুন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বি.টেক পাশ করেন। প্রায় চার বছর আগে তাঁর বিয়ে হলেও পরে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। দিল্লিতে একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন তিনি। চার-পাঁচ মাস আগে আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যান। পরে হিমাচল থেকে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়। সেখান থেকে পরিবারের অনুরোধে তাঁকে মেমারিতে ফিরিয়ে আনা হয়।
মেমারিতে বুধবার উদ্ধার হয় তাঁর বাবা মুস্তাফিজুর রহমান ও মা মমতাজ পারভিনের গলা কাটা দেহ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, মানসিক ভারসাম্যহীনতার জেরে হুমায়ুনই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
বর্তমানে পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কী কারণে তিনি সোজা বনগাঁ এসে মাদ্রাসায় হামলা চালালেন, সেই বিষয়ে বিস্তারিতভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মানসিক ভারসাম্য পরীক্ষার জন্য অভিযুক্তকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে পুলিশ সূত্রে।