বোলপুরে রাজনৈতিক উত্তেজনার কেন্দ্রে এবার প্রশাসনই। বীরভূম তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতা অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে কদর্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হলেও এখনও পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনও দৃশ্যমান পদক্ষেপ হয়নি। গ্রেফতার তো দূর, থানায় হাজিরাও দেননি অনুব্রত।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৭ তারিখ বোলপুর থানার আইসি-কে ফোন করে হুমকি দেন অনুব্রত। এরপর ২৯ তারিখ সেই হুমকির জেরেই বোলপুর থানা ঘেরাও করেন তৃণমূল কর্মীরা। ‘নাগরিক সমাজ’-এর ব্যানারে হওয়া এই বিক্ষোভে প্রত্যেক ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা তাঁদের সমর্থকদের নিয়ে থানার সামনে জড়ো হন বলে অভিযোগ।
ঘটনার আরও চাঞ্চল্যকর দিক — ভাইরাল হয়ে যায় অনুব্রতের হুমকির অডিয়ো। এই অডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর তড়িঘড়ি বসে পুলিশি বৈঠক। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, তৃণমূল নেতৃত্বকেও এই পরিস্থিতির বার্তা পৌঁছয়। পরদিন সকালে বীরভূমের এসপি জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে FIR দায়ের করা হয়েছে।
কিন্তু এখানেই ঘুরে যায় নাটক। হুমকি প্রদানকারী অনুব্রতের ফোন বাজেয়াপ্ত না করে, পুলিশ বাজেয়াপ্ত করে আইসি লিটন হালদারের ফোন। যুক্তি, ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ফোনে থাকা কল রেকর্ড প্রয়োজন। প্রশাসনের যুক্তি যতই নিয়ম মেনে কাজ করার দাবি করুক, সাধারণের মনে প্রশ্ন— হুমকিদাতা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে কেন?
ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশের নিরপেক্ষতা এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ভূমিকা নিয়েও উঠছে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন। এখন দেখার, তদন্ত কোনদিকে মোড় নেয়, আর আদৌ কি অনুব্রতের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে?