🟠 নিউজ ডেস্ক | হাওড়া | তারিখ: ৩০ জুন ২০২৫
দুর্ঘটনায় মস্তিষ্ক-মৃত্যু হয়েছিল হাওড়ার এক ২৩ বছরের যুবকের। তবে থেমে থাকেনি তাঁর জীবনের প্রভাব। মরণোত্তর অঙ্গদানের মাধ্যমে নতুন জীবন পেল এক ১০ বছরের শিশু সহ আরও কয়েকজন রোগী। পরিবার দেখাল এক মানবিক এবং সমাজ-সচেতনতামূলক উদাহরণ, যা অনুপ্রেরণা হয়ে রইল গোটা বাংলার কাছে।
রেনু ডেথরা, হাওড়ার ডোমজুড় থানার অন্তর্গত জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দা, পেশাগত কারণে কর্মরত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে। সেখানেই গত সপ্তাহে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় মাথায় গুরুতর আঘাত পান তিনি। প্রথমে ভর্তি করা হয় স্থানীয় হাসপাতালে, পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে।দীর্ঘ চিকিৎসার পর ২৫ জুন রাতেই চিকিৎসকেরা রেনুকে ব্রেন ডেথ ঘোষণা করেন। ঠিক সেই সময়ই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রেনুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন অঙ্গদানের বিষয়ে। দুঃসহ যন্ত্রণার মাঝেও রেনুর পরিবার এক মানবিক সিদ্ধান্ত নেয়—তাঁর হৃদপিণ্ড, কিডনি ও লিভার দান করার সম্মতি দেয় তারা।
এরপর ‘রিজিওনাল অর্গান অ্যান্ড টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশন’ (ROTTO)-এর সহযোগিতায় রেনুর অঙ্গগুলি সময়মতো সংরক্ষণ করে পাঠানো হয় বিভিন্ন হাসপাতালে। তাঁর একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় এক ১০ বছরের শিশুর শরীরে, যে দীর্ঘদিন ধরে কিডনি সমস্যায় ভুগছিল।
অপারেশন সফল হয়েছে এবং শিশুটি এখন স্থিতিশীল অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
রেনুর দাদা জানান, “আমরা ওকে ফেরাতে পারব না জানি। কিন্তু ওর অঙ্গ দিয়ে যদি অন্য কেউ নতুন জীবন পায়, তবেই শান্তি পাব আমরা।”
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাকি অঙ্গগুলিও সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে অন্য কয়েকজন উপযুক্ত গ্রহীতার শরীরে। প্রত্যেকেই ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
সমাজে সচেতনতার বার্তা
এই ঘটনাটি মরণোত্তর অঙ্গদানের গুরুত্ব এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির এক স্পষ্ট উদাহরণ। চিকিৎসক, সমাজকর্মী এবং প্রশাসনের তরফে রেনুর পরিবারের এই সিদ্ধান্তকে কুর্নিশ জানানো হয়েছে।