বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাঁদের পাহাড়ের গল্প শুনেছেন সকলেই, কিন্তু নদীয়ার প্রত্যন্ত এক গ্রাম চাঁদের ঘাটের কথা কতজনই বা জানেন! যেখানে নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর সংসারেই মানুষের নিত্যদিনের জীবন যাপন। আর তাদের কাছে শঙ্কর হলেন তাদেরই ভূমিপুত্র অনুপ রায়।
কিন্তু কে এই অনুপ? নিতান্তই কি ভূমি পুত্র? যার বেড়ে ওঠা কেবল পলাশীপাড়ার চাঁদের ঘাটে? প্রশ্নটা তথা কথিত শহুরে মানুষের মনে জাগলেও যার উত্তর পাবেন চাঁদের ঘাটে বসবাসকারী প্রতিটি মানুষের কাছে। যাদের কাছে অনুপ রায় হয়ে উঠেছেন প্রতিটি ঘরের দায়িত্ববান বড় ছেলে।
পড়াশুনো থেকে বেড়ে ওঠা সবটাই সেখানে। প্রত্যক্ষ করেছিলেন মানুষের নিত্যনৈমিত্তিক দিনযাপনের সমস্যা। আর সেটাই পাথেয় হয়েছিল তার সাফল্যের।
ব্যাবসায়িক কর্মসূত্রে একসময় অনুপ রায় পাড়ি দেন উড়িষ্যায়। আর সাফল্য আসতে স্বপ্নের বাস্তবায়নে সময় নেননি তিনি। নিজ ভূমিতে ফিরে এসেছিলেন গ্রামের মানুষের পাশে দাঁড়াতে, তৈরী করেন তার 'দৃষ্টিকোণ'।
প্রতি বছরই তার উদ্যোগে আয়োজিত হয় উন্নয়নের কলরব। যেখানে স্বাস্থ্য শিবির থেকে শুরু করে রক্তদান তো রয়েছেই, পাশাপাশি বিশেষ ভাবে সক্ষম, গ্রামের মহিলা, গাছ ও ক্রীড়া প্রেমীদের পাশেও দাঁড়াতে ভোলেন না তিনি। এবছর সেই উদ্যোগ অব্যাহত। ৭৫ জনকে নিজের হাতে তুলে দেন হুইল চেয়ার। এছাড়াও ত্রিপল থেকে পাঁচ হাজার মা বোনেদের হাতে শাড়ি উপহারস্বরূপ তুলে দেন তিনি। আর এই উপহার পেয়ে কারোর মুখে ফোটে হাসি তো কেউ পান বাইরে বেরোনোর স্বাধীনত
তবে এই মানব কল্যাণ যজ্ঞে অনুপ রায় যেমন তার পাশে পেয়েছেন তার মা গীতাঞ্জলি দেবীকে, তেমনি পেয়েছেন তার সহধর্মিনীকে। শুধু তাই নয়, প্রশাসনিক ব্যক্তিত্বরাও মুগ্ধ হয়েছেন তার এই উদ্যোগে।
আর এভাবেই অনুপ রায় হয়ে উঠেছেন কারোর কাছে বড় ছেলে তো কারোর কাছে সাক্ষাৎ মাসিহা।