নিউজ ডেস্ক: চরম অস্বস্তির মুখে পড়লেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। বৃহস্পতিবার সকালে মালডাঙায় পৌঁছনোর পরই তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। কালো পতাকা, কটূক্তি, এমনকি তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টিও হয় বলে অভিযোগ। এতে গাড়ির কাচ ভেঙে যায়, এবং মন্ত্রীর দাবি অনুযায়ী তিনি নিজেও আহত হন।
ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মন্ত্রী সরাসরি বর্ধমানের পুলিশ সুপারের দপ্তরে যান অভিযোগ জানাতে। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সিদ্দিকুল্লা বলেন, "আমি তৃণমূলের কোনও ক্ষতি করিনি, কিন্তু আজ যা ঘটেছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। আমাকে খুনের ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। যেখানে রাজ্যের মন্ত্রী সুরক্ষিত নন, সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?"
ঘটনার জন্য সরাসরি মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আহমেদ হোসেনের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ মন্ত্রীর। তিনি বলেন, “আইসির সামনেই ইট ছোড়া হয়েছে, চালককেও মারধর করা হয়েছে। পুলিশ চাইলে এই জমায়েত সরিয়ে দিতে পারত, কিন্তু কিছুই করেনি।”
অন্যদিকে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রফিকুল ইসলাম শেখের নেতৃত্বে একদল স্থানীয় তৃণমূল কর্মী মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায়। তাঁদের অভিযোগ, মন্ত্রী দীর্ঘ চার বছর ধরে এলাকায় কোনও কাজ করেননি, সাধারণ মানুষ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তাঁরা স্লোগান তোলেন “তোলাবাজ-ধান্দাবাজ মন্ত্রী চাই না”, এমনকি মন্ত্রীকে "পরিযায়ী শ্রমিক" বলেও কটাক্ষ করেন।
এই ঘটনার জেরে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী রীতিমতো হতাশ ও ক্ষুব্ধ। সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি জানিয়ে দেন, প্রয়োজনে তিনি দল ছেড়ে দিতেও প্রস্তুত। বলেন, “আমি আজ স্পষ্ট বলছি, এই দলের পরোয়া করি না। দলের উর্ধ্বতন নেতৃত্বকে সমস্ত ঘটনা জানাব। যদি দমন না করা হয়, আমি নিজেই সরে দাঁড়াব।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের অন্দরে ফের একবার বিদ্রোহের সুর স্পষ্ট হয়ে উঠল। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা এবং দলীয় শৃঙ্খলার অভাব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। ঘটনাটি ঘিরে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।